অভ্যাসই মানুষের মূল চরিত্র কিংবা মৌলিকতা। অভ্যাস বদলে গেলেই মানুষও বদলে যায়। কিভাবে
নিজেকে বদলাবেন?
অল্প অল্প করেই আপনি আজ হয়ত সামান্য খারাপ নয়ত পুরোই। আবার হয়ত আপনি খুবই
ভাল। আরো ভালো হবার চেষ্টায় নিজেকে বদলাবেন? বদলে যাওয়া একটি ঘটনার নাম।
মানুষ বদলায়, নানান সময়ে নানান কারনে বদলে যায়। খুব বেশি রাত করে ফেরা
লোকটাও এক সময় বদলায়, যখন বদলায় তখন বেলা শেষ। মানুষের আর কত বয়স হয়, বড়
বেশি হলে ষাট কি সত্তুর! আসুন জানা যাক । অভ্যাসের পরিবর্তনের দ্বারা আপনি
কতটা নিজেকে বদলাবেন?
নিজেকে বদলাবেনঃ কেন?
ব্যক্তিত্ব আর মনুষ্যত্ব হচ্ছে একজন মানুষের প্রথম এবং প্রধান আলোচনার
বিষয়। কোন মানুষের জন্য যদি আলাপ করতে হয় তখন তার কী কী নিয়ে আলাপ করেন?
আচরন, কার্যকলাপ আর ব্যক্তিগত দিক গুলোই। তাই নিজের জন্য যা কিছু করবেন তা
যেন হয়ে ওঠে অন্তত ভদ্র বা উন্নত একটা আলাপের বিষয়। এমন কিছু নয় যা শুনে
মানুষ হাসবে। এছাড়াও নিজেকে বদলাবেন নিজের জন্য। আপনার ভাল এবং উন্নতির
জন্য।
নিজেকে বদলাবেনঃ কী কী করবেন?
বদলাতে চাইলেই বদলানো যায়। আমার আপনার জীবনের কথা ভেবে সব সময় ভালো কিছু
করাই হচ্ছে প্রথম এবং প্রধান কাজ। ভাল কিছু বলতে কী বুঝি? এক জন মানুষের
বেঁচে থাকার জন্য কিংবা জীবনে উন্নতি করার জন্য দরকার হয় কয়েকটি বিশেষ
ব্যাপার। এর মধ্যে উল্যেখযোগ্য কিছু হচ্ছে-
বদ অভ্যাস ত্যাগ করাঃ বদ অভ্যাস হচ্ছে মানুষের জীবনের
সবচেয়ে খারাপ দিক। একেক জনের একেক রকমের বদ অভ্যাস থাকে। কেউ সিগারেট পান
করেন, কেউ মদ আবার অনেকেই খুব বেশি রাত করে বাসায় ফেরেন। কিছু লোক আছেন
শুধু মাত্র অলস আর কাজের প্রতি অনীহা। এটাও এক ধরনের বদ স্বভাব। এসব ত্যাগ
করতে পারা হচ্ছে প্রথম উদ্যোগ। আপনাকে পরিবর্তনের জন্য এটি সবার আগে জরুরী।
আরো জানুন
কিভাবে অভ্যাস পরিবর্তন করবেন? জেনে নিন কিছু কাজ অভ্যাসে পরিনত করার পদ্ধতি!
পরিশ্রমী হয়ে উঠুনঃ পরিশ্রম হচ্ছে সৌভাগ্যের একমাত্র
চাবি। এটা অনেকবার পড়েছেন। আজকাল যাদের আপনার চোখের সামনে প্রতিষ্ঠিত দেখেন
তারা কে কেমন পরিশ্রম করেছেন তা একদিন জিজ্ঞেস করে নিবেন। অনেকের রাত দিন
এক করে তবেই আজকের অবস্থানে এসেছেন। তাই পরিশ্রম করুন, যতটা আপনার শরীর
নিতে পারে।
সুস্থ্য থাকার চেষ্টা করুনঃ সুস্থ্য থাকার জন্য দরকার
হচ্ছে যেসব কারনে অসুখ বিসুখ হয় সেসব কারন এড়িয়ে চলা। যেমন নিয়মিত হাত পাঁ
ধোয়ার ফলে অনেক ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা যায়। খাবার আর ব্যায়ামের ফলেও অনেক
বেশি রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। কেবল মাত্র অসুখ বিসুখ হলেই ডাক্তারের কাছে
যান? না এখন তা করবেন না। অন্তত একজন ডক্তারের পরামর্শে নিয়মিত চেক আপ
করান। রোগ দেখা দেবার আগেই দেখুন রোগ আছে কি না। যদি রোগ দেখা দেয় তবে খুব
দ্রুত নিরাময়ের চেষ্টা করা যাবে। ভাল কোয়ালিটি খাবার নিয়মিত খেয়ে আর
অন্যান্য শরীর চর্চা করে দিন কাটালে অনেকটা সুস্থ্য থাকা যায়।
পরিকল্পনা করে নিজের ছোট বড় স্বপ্ন পূরন করাঃ পরিকল্পনা
করতে হয়। বছরের শুরুতে সবাই একটা সুন্দর পরিকল্পনা করেন, পুরো বছরে কী কী
করবেন এসব। আপনি নিজেও অনেক কিছু করার পরিকল্পনা করতে পারেন। পরিকল্পনা মত
কাজ করতে থাকলে এক সময় অনেক বড় কাজও শেষ হয়ে যাবে। এছাড়াও যদি প্রতিদিন দশ
মিনিট করে কিছু করতে পারেন তা এক বছরে ৩৬৫০ মিনিট যা মোট ৬০ ঘন্টা ৫০
মিনিট। ৮ঘন্টা করে যদি কোন অফিসে কাজ করেন তবে এই সময় প্রায় সাড়ে ৭ কর্ম
দিবস। তো ভাবুন এই সাড়ে সাত কর্ম দিবসে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট কাজ করে ফেলা
যায়। পরিকল্পনা করলে নিজেকে বদলাতে পারেন অন্তত প্রতিদিন ১০ মিনিট করে কাজ
করলেও।
ধৈর্য্যশীল হয়ে উঠুনঃ মানুষের জীবনে ধৈর্য্য অনেক বেশী
কাজের। যে কোন কিছু পেতে হলে মনে জোর নিয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়।
রাগে কিংবা অন্যান্য খারাপ পরিস্থিতিতেও ধৈর্য্য ধারন করতে হয়। আরো পড়ুন
কিভাবে ধৈর্য্যশীল হবেন? ধৈর্য্যশীল মানুষের বৈশিষ্ট্য সমূহ
বই পড়াঃ অনেক মজার বই কিংবা সিরিয়াস বই আছে যা আপনাকে
সব দেবে, আনন্দ, হাসি কান্না ইত্যাদি। পড়তে পারেন। বই পড়লে মানুষের জীবনে
অনেক কষ্ট কমে আসে। জীবন নতুন নতুন দিক খুঁজে পায়। আমাদের দেশে বই পড়া অনেক
কমে গেছে এখন। তাই মানুষের বোধশক্তিও কমে যাচ্ছে। নিজে বই পড়ুন অন্যকেও
পড়তে উতসাহ দিন।
নিজেকে বদলাবেন কখন?
আগেও বলেছি এর সময় সীমা নেই। আপনি চাইলে যে কোন সময় থেকে নিজেকে বদলাবেন
যে কোন ভাবেই তা সম্ভব। মাথায় রাখবেন, নিজেকে বদলাবেন ই যদি তা যেন
মৃত্যুর আগে আগে না হয়। অন্তত কিছু সময় যেন হাতে থাকে। সুখী জীবনের প্রথম
শর্ত হচ্ছে সুখী থাকার চেষ্টা করা। জীবনকে বুঝতে পারা, অনুভব করা। আয়োজন
করে নিজেকে জানা।